সাম্প্রতিক প্রকাশিত

10/recent/ticker-posts

মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আবরার ─এর ছয়টি কবিতা


 

প্রেমানল 

   
তাকে-তাকে ফর্মা বানানো কাঠামোয় 
ঠুসে ভরবো বারুদ─রঞ্জিত বিস্ফোরক।
খোলস লাগাবো চতুরপাশ ঘিরে।
মুখোশ পরবো ঢেকে, দশ-দশটি মুখে।
    
আগুন লাগাও তীরে, হাতে নাও ধনুক।
জ্যায়ের টানটান চাপে ছুঁড়ে দাও তীব্র বেগে
সূচালো ফলার প্রেম। 
     
অনন্ত তেজ চাই;
রাবণ জ্বলবে─সীতা'র কামার্ত টানে
জ্বালাও দেবী, পোড়াও তোমার প্রেমে!
হলে হোক, হবো ছাই
পরিণামে।
    
     

কাঙ্গালের সঙ্গম ক্ষুধা

     
অহিংস যৌন ক্ষুধায় ভুগছি!
অর্থে কুড়ানো মাংসের স্বাদ
বা
কামুকে কুমারীর দেহে
জবরদখল নয়, ভিন্ন মেরুর কোনো
রমণীর বুকে পুরুষত্বের ঝাঁজ নিংড়েও মিটবে না
ভোজ।
    
পরাধীন রাজ্যে বিপ্লবী বীজ বুনে, চাষাবাদে জন্মানো
স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র─স্বৈরাচারী শাসকের
একক সুখ চাই। হায়েনার থাবায়ও ফুঁসে গর্জাবে
যে দ্বিপাক্ষিক প্রেম।
     
নদীর স্রোতে─ পাখির মুখরিত কলকল
ছন্দোময় কীর্তন, সাথে পাথর গলা প্রেমিকার উষ্ণতায়
কদমের তীব্র অসহনীয় সুবাস মাতানো
ঙ্গ
এক
অভিন্ন
তোমার পরশে থাকে।
       
মূলত কাঙ্গালের দুরূহ ভোগ-ব্যাধি-ভুখ
তুমি নামক ভালোবাসার প্রেমহীনতায় উদ্ভব।
তোমাতেই সমূহ শর্তাদি
পলকেই
নি
 রূ
দ্বে
 গ!
      
    

অন্তর্যামী

     
প্রার্থনায় বসো না
প্রিয়জনার আকাঙ্ক্ষায়─
    
 ঠোঁট আওড়াবে
জানা-চেনা কোনো নাম,
মনাসনে জাগ্রত অন্য কেউ!
    
শু নে ছি:
জগদীশ্বর নাকি
অন্তর্যামী।
     
     

ভাগবাটোয়ারা

    
তবে এসো, ভাগ-বাটোয়ারা করে ফেলি একত্রে;
                        মেঘের ফাঁকেফুকে ক্ষিপ্ত-পড়ন্ত
                                                     আসমানের
                                            আজাদ বজ্রাঘাত!
     
  উজ্জ্বল দ্যুতি তোমার হোক,
             আমার জ্বলন পাত!
   
      

চলে যাও ছেড়ে

      
চলে যাও ছেড়ে নিশ্চুপে কোথাও একাকী তেপান্তরে,
দূর হতে দূরান্তরে, শুদ্ধ প্রণয় ঠুকরে
অন্তিক বহুদূর।
     
ছেড়ে গেলে তবে প্রার্থনায় কাটাবো সময়
দু'হাত করজোড় করে আবার কখনো দু'হাত পেতে
অনুনয়ে, ভিক্ষায় চাইবো ভুলিতে
ভনিতার উপাসনায়!
ঈশ্বর সবটা জেনেও ঠাট্টার ছলে জিজ্ঞাসায় 
জানিতে চাইবেন নাম। জিকিরের একনিষ্ঠ প্রলাপে
পাপহীন এক পুষ্পের নাম শুনে জানিয়ে দিবেন─
দোয়ায়, আরাধনায় যে নাম ভোলার প্রচেষ্টা হয়
সে নাম একান্তে গেঁথে যায় হৃদয়ে নিরালায়;
তবুও ভোলার অনধীন অভিপ্রায় সতত অসম্ভব।
     
ঠিক অতটাই চাই দূরত্ব─
যেখান হতে আর ফেরা যায় না, ভোলা যায় না!
মরুভূমির প্রখর তাপে
মরিচীকায় দেখা স্বর্গীয় পানীয়ের ন্যায়
নিকটে পাওয়া যায় 
আমৃত্যু।
     
বরং দূরেই সরে যাও─ এক জীবনে
এরচে' নিকটে
আর
কীভাবে
চাই!
কীভাবে
পাই!
   
     

পরমায়ু'র বরফজল

     
আজো অনেকটা─ অনেকটা বাকি পৃথিবীর পরমায়ু
সার্বিক স্বপ্নজাল ভেঙে-ভেঙে
যাপিত জীবন আশাহত হয়ে ফিরে এলে
মৃত্যুর দ্বারে─ তবুও বাঁচার স্পৃহায় ছায়াতল ভেবে
জুবুথুবু হয়ে প্রত্যাশায় বসি─ কল্পিত প্রণয়াকাঙ্ক্ষী আঁচল তটে।
নতজানু হই কাম্য স্পর্শ-ক্ষুধায়
ঈশ্বরীয় ঐ ছোঁয়াতেই লাগে কেবল পুনরুদ্ধার!
      
নগ্ন হও─ যাবতীয় অবাঞ্ছিত বসন খুলে এসে
পাকাপোক্ত কঞ্চির রূপে, খুঁটি গেড়ে দাঁড়াও পাশে
ঝেড়ে ফেলে মুখোশ─ সকল নকল পোশাক।
পদে-পদে ক্লিষ্টতায় নুইয়ে পড়া নেতানো যাপনলতা
জাপটে ধরুক শেষ অবলম্বন─ পরিশ্রান্ত চিত্ত 
পাক বৃদ্ধি, সমৃদ্ধি─ হোক বিশ্রামের আবাস।
      
রক্ষা করো ধ্বংসলীলায় তলিয়ে যাওয়ার আগেই─
অনাদিকাল ধরে যেনো দিকপালশূন্য
ভাসমান উচ্ছিষ্ট: শুক্রাণুতিমি'র মোম-সদৃশ
বমিত বস্তুর ন্যায়, তামসী-মহাসিন্ধুর অথৈ জলে।
উদ্ধার করে নাও─
স্নেহতাপে রুপান্তরিত করো ভালোবাসার মহামূল্য সুগন্ধী-সম্ভার।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

4 মন্তব্যসমূহ