মাকড়সা
❉ তানভীর হোসেন
‘তুমি কি একটু চার হাত পায়ে ভর দিতে পারবা? মানে
বুঝছো তো!’
জানলা
চারটা দিয়া কড়া রোদের আলো আসতেছে। আলো এসে বীণার বুকে পড়ে আছে। ডান স্তনের উপর।
ফলে তা দেখা যায় না। বামটা যায়। অ্যারিওলার বাইরে একটু উপরের দিকে একটা লাল তিল।
দীপণ অ্যারিওলার বাংলা মনে করতে পারতেছে না কিছুতেই।
জানলা
থেকে বীণার ডান স্তন পর্যন্ত যে আলোর লাইন তার ভেতর অসংখ্য ধূলাবালি, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র
ফাইবার টাইবার ইতস্তত উড়তেছে। দীপণের নিজেকে সেই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পদার্থ আর
বীণাকে সেই আলোর রেখার মতো মনে হইতেছে।
‘আমি নীচে শুই, তুমি উপরে উঠো’
ঘরটার
নীচু ছাদ। একটা কোণায় মাকড়সার বাসা। মাকড়সার বাসায় মাকড়সা নাই। ছোটবেলায় দেখা
যাইতো। এখন কেন জানি আর দেখা যায় না! আলোয় ঝাপসা হয়ে আছে বীণার বাম স্তন।
‘একটু মুখ ঘুরাইয়া মানে উলটা হইয়া মানে রিভার্স কাউগার্ল...’
বীণার
স্তন দেখা যাইতেছে না আর। পিঠের মাঝ বরাবর জমির আইলের মতো শিরদাঁড়া দেখা যাইতেছে, বড়শিতে
গাঁথা মাছের মতো বাঁকা হইয়া আছে সেইটা। ছোটবেলায় একবার ফাতারির ডুবে যাওয়া দেখে
দীপণ যখন ঝট করে ছিপটান দিছিলো তখন মাছের বদলে একটা সাপ উঠে আসে উপরে- ঘটনাটা মনে
পড়তেই দীপণের গায়ের সব লোম খাড়ায়া গেল।
বীণা
দুই হাত দিয়া নিজের চুলগুলা দলাই মলাই করতেছে। কখনও কখনও দীপণের উরু কিংবা
হাঁটুতেও রাখতেসে সে হাতদুইটা।
কোন
কথা নাই কারও।
‘ভাল্লাগতেছে....? তোমার....? তোমার....!’
কী
করো?
‘পিলো বুক’ সিনেমাটা দেখছো?
না, ক্যান?
নায়িকাটার
একটা ফেটিস থাকে।
কী
ফেটিস?
সে
চায় যেন তার শয্যাসঙ্গী তার শরীরে লেখে, আঁকায় এইরকম আরকি!
মজা
তো!
কী
জানি!
ক্যান? শুনে
তো ভালই লাগতেছে ব্যাপারটা! তোমার ভাল্লাগে নাই? তুমি না
লেখালেখি করতা, আঁকতা! তোমার তো ভাল্লাগার কথা!
ছাদের
সেই মাকড়সার জালের ঠিক মাঝাখানে একটা বিশাল সাইজের মাকড়সা বইসা আছে। তড়পাইতে থাকা
একটা জ্যান্ত পিঁপড়ার গায়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জাল জড়াইতেছে সে।
দীপণ
বললো, বীণা, আমরা কি একজন আরেকজনকে মাকড়সার মতো খায়া
ফেলি?
0 মন্তব্যসমূহ