![]() |
হিরণ্য হারুন |
কবিতা বিষয়ক এক ফোটা হোমিওপ্যাথি
কবিতা যেন গণিত হারিয়ে পাড়াগাঁয়ের চঞ্চল কিশোরী— সে নূপুর পায়ে কাদাজল ভিজিয়ে যাবে গ্রাম্য মেলায়। তার কোন কলঙ্ক নেই, নেই সাতপ্যাঁচ— নেই প্রতিবেশীর কথার খোঁচা। সে আপনাকে খুঁজতে খুঁজতে নদীর পাড় ভেঙে চলে। কবি নিরবচ্ছিন্নভাবে যাপন করেন কবিতায়। আলো যেমন চোখে নিরবচ্ছিন্ন ঠিক তেমন আবার কোয়ান্টামে সে বিচ্ছিন্ন কণা। আলোর মত দ্বৈত ধর্ম অনুভূতি আর শব্দের চালে কবিতা দাবা খেলে হারিয়ে দেয় চতুরঙ্গ শব্দের ব্যবচ্ছেদ করে। জলের শব্দে কবিতা রপ্ত হয় মিশে যায় রঙহীন, শব্দে শব্দে নীল হয়ে ওঠে আকাশ। কবিতা মানবধর্মের অথবা মানুষের রঙহীন রঙিন— ভায়োলিন শব্দ। কবিতার থিম সুনির্দিষ্ট হতে পারে আবার নাও থাকতে পারে। কোনো বার্তা ছাড়াও কবিতা হতে পারে। ছককাটা, ছকে আঁকা কবিতার বৈশিষ্ট্য নাও হতে পারে। কবিতা একটা বিহঙ্গ— কোন কারণ ছাড়াই সে উড়তে পারে, ছাড়তে পারে ঘর। প্রকৃতি ভালো লাগলে কবিতা হোক প্রকৃতির, প্রেম ভালো লাগলে কবিতা হোক প্রেম, বিদ্রোহ ভালো লাগলে কবিতা হোক দ্রোহ। যার যেমন খুশি, সে কবি হয়ে যাক, মানুষ মাত্রই কবি, কবি ছাড়া কেউ মানুষ নয়, সে প্রাণী। জগৎ সংসারের এই খেলায় ছলে-বলে- কৌশলে দিন যায় যাপনে, কবিতা আমাদের খোরাক হয়ে আসে মননে। মন চর্চায় গণিত বুঝে কবিতা পাঠ হয় মস্তিষ্কে। যাপিত জীবনে পঠিত গড়নে কবিতা তৈরি হয় চর্চা ও বোধে। বোধকে যথেষ্ট চর্চা বা অনুশীলন করলে তা কবিতাতে পরিবর্তিত হয়। ব্যক্তিগত, পরিবেশগত ও প্রাকৃতিক নিয়ামক কবিকে নিমন্ত্রণ করে কবিতা লিখতে— ভাবনাচিন্তার সংজ্ঞাকে অসংজ্ঞায়িত করে লেখে ফেলি কবিতা।
●
সে একটি দর্শন, যদি স্তনের উপর পাহাড়
সে সন্তান নয়, প্রেমিকা!
আকাশ থেকে নেমে পড়া বৃষ্টি
নারীর চোখে
পাখির চোখের দৃষ্টি এবং হৃদয়
প্রথম শরৎকালের বরফের মতো ভঙ্গুর।
●
জীবন যাপিত হয় বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে
ফিরে তাকাবেন না,
উপহার দেওয়া হবে
আকাশ-বৃষ্টিতে সূচিকর্ম প্রফুল্ল ধ্বনি
উত্তরাধিকারসূত্রে অন্তহীন হাঁটার ঘড়ি।
স্মৃতি জমবে—
আয়ুকাল গোরুরগাড়ি যা মৃত্যু পর্যন্ত।
●
পোশাক পরত পরতে মস্তিষ্কের চিন্তাচেতনা এমন হইছে যে,
●
আমি-তুমি যেদিকে যাই আমরা
সমুদ্র, পাহাড় অথবা পরম্পরা
দু’জন দু’জনকে ছাড়া—প্রাণ শব্দের প্রতিধ্বনি
কিছুই তো নয়, আমাদের কথোপকথন ছাড়া।
পথ, পথিক আর পাখিদের জোড়া।
●
মাল্টিভার্সের ক্ষুদ্র ব্যবধিতে আমি প্রচার করি—আমি আমার ব্যক্তিগত প্রফেট
‘সময় একটি ছবি—জল দ্বারা আঁকা আমি’
তবু তোমারে বাসি ভালো
রাখিবো বুকের গহীনে
স্পন্দন অনুনাদে কম্পিত এ-হৃদয়
আমি তোমার নদ, তোমায় ভালোবেসে সময়ের প্রপাত
●
জলে নিভে না যে অনল, পাঠক বোঝে না যে কবিতা
গণিত বোঝে, সংখ্যার বোঝা— গণিতের শিক্ষিকা!
শিশিরের মতো অশ্রু ঝরে, এই বুঝি গেলো মরে
সূঁচ ফুটিয়ে পায়ের তালুতে আঁকো সবুজ নকশী কাঁথা
করতোয়া নদীর জলে আমি ঠিক করি চুলের ভাঁজ
মনে করি জল-ই জীবন, জল-ই রসায়ন।
জলে নিভে না আমার প্রেমিক হওয়ার অশ্রুত অভিমান...
0 মন্তব্যসমূহ