কবিতা স্থানকাল নিরপেক্ষ অনুভূতির পর্যবেক্ষক
কবিতা যেন পর্যবেক্ষকের হারিয়ে যাওয়া সময়ের লুপ─ স্থানকালের আপেক্ষিকতায় ছন্দের যাদুবলে মোহিত একাকিত্বের তীব্র আনন্দের ভোগ অথবা সাদাকালো বেদনার বৃক্ষ। কবিতা আমার কাছে আমার জীবনবোধের মর্মরধ্বনি। জীবনকে বুঝতে চাওয়া, জীবনের উত্থান-পতন, সভ্যতা, সন্ত্রাস, ধার্মিক-অধার্মিক, নাস্তিক-আস্তিকের কাণ্ডখানা, পুঁজিবাদ, ধর্ম, সমাজতন্ত্র, দেশপ্রেম, নারী... সব কিছুই। কবিতায় কবির চিন্তার জগৎ উঠে আসে, ছক কষে কল্পনা ও গণিতে। জীবনের জ্ঞানকে সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশিত চিন্তায় স্থানান্তর করে যা পার্থিব-অপার্থিব জগৎ ভাবিয়ে তোলে।
কবিতা প্রতিবাদের হাতিয়ার─ কখনো সে আমার যাপিত জীবনের কোন বিশেষ সময়ে মুহূর্তের মূর্ছনা হয়ে আসে। কখনো সে আমার গভীরে বিরাজিত স্তব্ধতার অনুরণন, আবার কখনো কোলাহলে নির্জনতার আর্তি। আবার কখনো সে আমাকে জানায় সে ধর্ষণের প্রতিবাদের হাতিয়ার, অধিকার আদায়ের হাতিয়ার, কখনো হয়তো এসবের কিছুই না─শুধু মানসিক বোধ ও প্রজ্ঞার ব্যাপ্তি।
একজন কবিকে আমার কাছে মনে হয় সংগ্রাহক ও পর্যটক । যিনি প্রকৃতি-পরিবেশ থেকে কথনের সৌন্দর্য, ভাষার বিধি, শাব্দিক রঙ-গন্ধের অপূর্ব সংযোজনে পরিশুদ্ধভাবে কবিতার উপাদানগুলোর পরিচর্যার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। যেখানে কবিতার শরীর জুড়ে নিজস্ব অনুভূতিগুলো মূর্ত হয়ে ওঠে বিমূর্ত অনুভূতিকে উপলব্ধি করে। উপমা, অলংকার, কাব্যিকচিত্রে মধ্যে দিয়ে নতুনত্বের মৌলিকতা। এই মৌলিকতা কবিতাকে করে দুরূহ, দুর্বোধ্য অথবা সহজ-সরলা!
'তোমাকে ভালোবাসতে ইচ্ছা করে সমান্তরালে
রেললাইনের মত পাশাপাশি─
সমান ভালোবাসে যাচ্ছি, ছুঁয়ে দিতে পারছি না।'
মানুষের অনুভূতির প্রকাশই কবিতা যা সংজ্ঞা থেকেও অসংজ্ঞায়িত, শূন্য থেকে আলো!
0 মন্তব্যসমূহ