মেটামরফসিস
হয়তো ঝরা পাতাটির
মতো ফিরলাম না, বৃক্ষে আর
কুৎসিত মথরূপে
সর্বাঙ্গে নকশা লুকিয়ে জলে তরঙ্গে
এলিয়ে দিলাম অবসাদ
ব্যর্থতা ভ্রমপূর্ণ সমগ্র জীবন।
আমাকে সবাই খুঁড়ে
নিয়ে গেছে যার যা দরকার—
হেডফোন, সহমর্মিতা, পাঁচশো টাকার খুচরা এহেন মামুলি
জিনিসও।
গোপনে বা প্রকাশ্যে— স্থিরতাকে হৃদপিণ্ড জ্ঞান করে,
করে গেছে এফোঁড়
ওফোঁড়। তবু এই যুযুৎসু পৃথিবীতে
কেবল আমিই যেন অস্ত্র
লুকাতে চাইছি প্ৰাণপণ ।
আমি ভীতু প্রকৃতির, টিকটিকি ভয় পাই, ভয় পাই
পৃথিবীতে নিতান্ত মৃত
ইঁদুর দেখেও। ধ্রুব এক শিখা তবু বেঁচে আছে বলে মনে হয়।
হয়তো সহসাই পরিযায়ী
কোনো পাখির অসতর্ক অবতরণ
আমায় ছিটকে দেবে
জলে। জলের গভীরে, পৃষ্ঠে বিনীত এই যাপন
রুয়ে দিতে দিতে কেটে
যাবে সমস্ত জলভীতি।
আসলে ভালোবাসা
কুড়িয়ে পেলে কিছু, মৃত্যুর ভয় হ্রাস পায়।
প্রতিবন্ধী
একদিন তোমাকে কেউ
থাপ্পড়ে
জীবন বোঝাবে জ্যামিতি
স্যারের
‘প্রমাণিত’ লেখাবে সুখ-অসুখের:
উপপাদ্যের ল্যাজে,
আহাম্মক ছিলে,
এই প্রমাণের পর
বিশ্বাস করো বোবা হয়ে যাবে,
কেউ বোঝে না অভিমানে
আর মানুষি হবে না,
তুমি তিনফুটোওয়ালা
নারিকেল খোলে
বন্দি থাকবে বাকিটা
জীবন,
পৃথিবী তোমাকে এভাবেই
চায়,
সফল প্রতিবন্ধী হবে
তুমি।
জলের
গান
আমি
সে নৌকার মাঝি জলাধারে দিবারাতি
ঘুরে
ফিরে জলেতে নেমেছি।
জলের
অতলে
খুঁজি মুখ নিশ্চুপ এমন স্থৈর্যের রূপ
শুধু
দেখেছি পানকৌড়িতে।
মীনের
মায়াবী তালে কত খল জোছনাতে
শুনে
গেছি রমণের ধ্বনি
ভাবি
শুধু অবতার তবে এ কী লীলা তার
মম দেহে নাই কেন যোনী!
ঘুরেছি
ঘাটের মরা যেভাবে বেহুলা ভেলা
ভ্ৰমেছিল
দিশাহীন জল।
নদীকূলে
করি বাস বৃথা মম জলবাস
ত্যাগে
হবো ঘোর উভচর।
পাহাড়ি
নদীর বুকে শত রতিহত দুখে
অচিন
নারীর আঁকি মুখ
দূর
থেকে দূরে সুরে স্রোতে সরে সরে পুড়ে
বাঁধিয়েছি
আদিম অসুখ।
প্রেমের কবিতা
অন্ধকারে খুঁজতে
গিয়ে ফুল
ভেঙে গেল কাচের
ফুলদানি
আমায় যদি খুঁজতে আসো
ফুল
চাঁদের বুকে ছিদ্র
হবে জানি
ওই নাকের রুবিঘর্মফোঁটা
প্রিজম যেন ছলকে দিলো
আলো
সেই ধনুতে ব্যথার যতো
লোনা
অর্ঘ্যরূপে সবই হলো
প্রকাশিত।
বায়ুচৌচির
বায়ুচৌচির রাতে
ডাকছে কোথায় অপলাপি
ঘুঘু
খুন উঠে আসছে
কণ্ঠনালে
ঘুঘুর মতো হচ্ছে না
তো শুধু।
0 মন্তব্যসমূহ