আফরিন পদ্য —এর কবিতা

 

‣আফরিন পদ্য

অবহেলিত

কবিতাগুলো অবহেলিত, সময় নেই আর পড়ার
মনের কথা মেলে ধরতে, হারিয়ে গেছে সেই ছড়ার।
কলম বোধহীন বসে আছে, কাগজে আঁকে না কেউ,
আবেগগুলো বন্দি রয়ে যায়, অন্তরের অন্ধ গভীর ঢেউ।
 
শব্দেরা চিৎকার করে, তবু শোনে না কানে কেউ,
মাটির কাছে গল্প থাকে, পাতা খসে যায় নীরব ঢেউ।
স্মৃতির পাতায় জমে ধুলো, ছুঁয়ে যায় না কারো মন,
কবিতার দুনিয়ায় হারিয়ে গেছে, স্বপ্নের আলো রঙ।
 
অবহেলায় ঝরে পড়ে, কত যে গল্প, কত যে কবিতা
সময় স্রোতে ভেসে গেছে, কবিতার মধুর সেই প্রাণ।
তবুও আশার মশাল জ্বলে, কেউ যদি ফিরে আসে
কলমের ডগায় কথা ফুটে, শব্দেরা সুরে ভাসে।
 
কবিতাগুলো অবহেলিত, তবু আছে প্রাণে আশা
একদিন ফিরে আসবে তারা, আলোর মত ভালোবাসায়।
তখন আবার কাগজ ভরবে, কলম হবে সেই গান
কবিতা পাবে আপন ঠিকানা, হৃদয় হবে তাদের প্রাণ।
 
 

অপেক্ষা

অপেক্ষা সে তো পাথর
নিষ্ঠুরতা কুঠারাঘাত
প্রাণহীন নিস্তেজ
অপেক্ষা—  আঘাতে আঘাতে।
অপেক্ষা, তার দিনের আকাশ
বিভীষিকা ভরা ঘুম।
প্রেম দেখেছি,
কি নিষ্ঠুরতা
পরিহাস মানুষ হয়ে দাস!
তাচ্ছিল্য,  অবহেলায় শত অসম্মান লাঞ্চনার
চিহ্ন দহে বহন করা।
মনুষ্যত্বের চরম ব্যত্যয় ঘটেছে
খর্ব করে জীবনের স্বাধীন বিকাশ ।
প্রেম নামান্তর মিশে গেল গোধূলির তলে,
জ্বালিয়ে দিয়েছে বিষাক্ত ধোঁয়ার কুজ্ঝটিকায়
মৃত্যুর বিকট বিভীষিকা।
 
 
 
দুঃস্বপ্ন

এই শঙ্কিত  শহরে
একা আমি দাঁড়িয়ে
দিনের আকাশ  ঘুমিয়ে
রাতের আকাশের তারকা
বিভীষিকা ভরা ঘুম।
আর আমার  আকাশ নিশ্চুপ
আমার  দুঃস্বপ্ন  ভরা রাত্র-দিন
হয়েছে  বিভীষিকায় পূর্ণ।     
 
বিষাক্ত  আমি, দুঃখ  বেদনায় অনুতপ্ত
কোমল কুয়াশা স্নেহে
সব বাধা তুচ্ছ করে ছুটেছি নির্ভীক চিত্তে।
 
ছিঁড়ে  ফেলা সেই দুঃস্বপ্ন  কথা মালা
ভেঙ্গে  ফেলা মায়া মমতা
আমার আকাশে নতুন  চাঁদ।
 
আমার আকাশে তোমার অবদান আমিতে পরিপূর্ণ।
 
 
 
 ভিড় সম্মুখীন

কোলাহলপূর্ণ রাস্তায়, শহরের চত্বরে
তাড়াহুড়ার ঘূর্ণিতে মুখ ঝাপসা
একেকটা গল্প, অচেনা পৃথিবী,
আনন্দ এবং ভুলের একটি জীবনকাল।
 
একটি হাসি বিনিময়, একটি ক্ষণস্থায়ী দৃষ্টি
চোখে-মুখে স্বপ্নের প্রতিধ্বনি
ভার বহন করে, হৃদয় যে ব্যথা,
মানুষের বন্ধনে।
খেলার সময় শিশুদের হাসি থেকে
বয়সে জীর্ণ ভ্রুর বলিরেখায়
প্রতিটি জীবন একটি অধ্যায়, একটি গল্প বলার
ব্যস্ত পৃথিবীতে
যেখানে প্রতিটি পথ মিশে আছে
প্রতিটি মুখের সৌন্দর্য কথা
এবং গল্প যা আমাদের রুপকথা...